প্রাত্যহিক জীবনে রসায়ন
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল ক্ষেত্রে রসায়ন এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে | আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তাতে রসায়ন রয়েছে, যে বাতাসে আমরা নিশ্বাস নিই তাতে রসায়ন রয়েছে, আমাদের সাবান, আমাদের আবেগ এক কথায় যে সমস্ত বস্তু আমরা দেখতে ও স্পর্শ করতে পারি সকল কিছুতেই রসায়ন বিদ্যমান। আজ আমি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কিসু মজার রসায়ন নিয়ে আলোচনা করব।
মানব দেহের উপাদান: মানব দেহের বেশির ভাগ হচ্ছে পানি । যেসমস্ত উপাদান দ্বারা তৈরী সেগুলো নিম্নরূপ:
১. অক্সিজেন (৬৫% )
২. কার্বন (১৮%)
৩. হাইধ্রজেন (১০%)
৪. নাইট্রজেন (৩%)
৫. কালসিয়াম (১.৫%)
৬. ফসফরাস (১.০%)
৭. পটাসিয়াম (০.৩৫%)
৮. সালফার (০.2৫%)
৯. সোডিয়াম (০.১৫%)
১০. ম্যাগনেসিয়াম (০.০৫%)
১১. কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, মলিবডেনাম, ফ্লুরিন, ক্লোরিন, আয়োডিন, মান্গানিজ, কোবাল্ট, এবং আইরন (০.৭০%)
১২. লিথিয়াম, সট্রনিয়াম, এলুমিনিয়াম, সিলিকন, লীড ভানাদিয়াম, আর্সেনিক, ব্রোমিন,
নাইট্রোজেন
হিলিয়াম
নিয়ন
অক্সিজেন
নির্মাণ সামগ্রী
নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ইট এবং সিমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বালি ও পানির সাথে সিমেন্ট মিশিয়ে ‘মর্টার’ এবং ইট বা পাথরের টুকরা, সিমেন্ট, বালি ও পানি মিশিয়ে কংক্রিট তৈরি করা হয়।
সিমেন্ট (Cement): সিমেন্টের মূল উপাদানগুলি হলো চুনাপাথর, সিলিকা (বালি), আয়রন অক্সাইড ইত্যাদি। এই উপাদানগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ক) চুন জাতীয় পদার্থ (চক, চুনাপাথর প্রভৃতি)।
খ) মাটি জাতীয় পদার্থ (সিলিকা, আয়রন অক্সাইড, অ্যালুমিনা প্রভৃতি)।
সিমেন্টে জিপসাম যোগ করা হয় যাতে সিমেন্ট জমাট বাঁধতে দেরি হয় এবং কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
সিমেন্ট
ঔদক (hydraulic)
অনৌদক (Non-hydraulic)
পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট
নন-পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট
পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। চুনাপাথর (Limestone) এর সাথে। সামান্য কাদা বা এ্যালুমিনো সিলিকেট (Al2SiO5) মিশিয়ে বিশেষায়িত চুল্লীর মাধ্যমে ক্লিঙ্কার তৈরি করা হয়। ক্লিঙ্কার চূর্ণ (>= ৯৭%) করে তার সাথে সামান্য জিপসাম (=<৩%) মিশিয়ে আধুনিক পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট তৈরি করা হয়।
ইট (Brick): তৈরির পদ্ধতি অনুসারে ইটকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। বাংলা ইট, সিরামিক ইট এবং কংক্রিটের তৈরি ইট। সাধারণ ইটকে বাংলা ইট বলে। মেশিনে বানানো ইটকে সিরামিক ইট বলে। সিরামিক ইটে সিলিকা (৫৫%), অ্যালুমিনা (৩০%), লৌহ অক্সাইড (৮%), ম্যাগনেসিয়া (৫%), জৈব পদার্থ (১%) থাকতে পারে।
কাঁচ (Glass): কাঁচ রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। কাঁচ বহুদিন রোদে বা পানিতে থাকলে নষ্ট, ক্ষয় বা বৃদ্ধি হয় না। কাচ তৈরির প্রধান কাঁচামাল হলো বালি। বালির প্রধান উপাদান হলো সিলিকা। সিলিকার রাসায়নিক নাম সিলিকন ডাই অক্সাইড (SiO2)। সিলিকার বিশুদ্ধ রূপ কোয়ার্টজ।
সারিন (Sarin): সারিন (C4H10FO2P) অত্যন্ত বিষাক্ত এক ধরনের বর্ণ ও গন্ধহীন তরল পদার্থ যা রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে অকার্যকর করে দেয়।
নাইট্রোগ্লিসারিন (Nitroglycerin): নাইট্রোগ্লিসারিন বিস্ফোরক পদার্থটি সালফিউরিক এসিড ও নাইট্রিক এসিডের সংমিশ্রণে প্রস্তুত করা হয়। পাহাড় ভাঙ্গা, টানেল তৈরি ও খনিজ শিল্পে ব্যবহৃত বিস্ফোরক পদার্থ ডিনামাইট প্রস্তুতিতে নাইট্রোগ্লিসারিন ব্যবহৃত হয়।
টি.এন.টি (TNT): 2, 4, 6 ট্রাই নাইট্রো টলুইনকে সংক্ষেপে টি.এন.টি বলে। এটি প্রধানত বিস্ফোরক পদার্থ হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বোমায় ব্যবহৃত হয়।
পিকরিক এসিড (Picric Acid): পিকরিক এসিডে রাসায়নিক নাম ২,৪,৬ এটাইনাইট্রোফেনল। এটি বিস্ফোরক যৌগ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া পোড়া ক্ষতের জ্বালা ও পচন নিবারণে
ডিডিটি (DDT): ডিডিটি এর রাসায়নিক নাম প্যারা প্যারা ডাইক্লোরো ডাই ফিনাইল ট্রাই ক্লোরো ইথেন। শক্তিশালী জীবাণুনাশক ও কীটনাশক হিসেবে ডি.ডি.টি প্রচুর ব্যবহৃত হয়।
গ্যামেক্সিন বা লিনডেন: গ্যামেক্সিন পাউডার বা লিনডেন এর রাসায়নিক নাম বেনজিন হেক্সাক্লোরাইড (C6H6Cl6)। এটি শক্তিশালী জীবাণুনাশক ও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।